Answer:
উত্তরঃ আল্লাহর মহিমা! হালীমার ভাগ্যের দুয়ার খুলে গেলো এবং কুল-মাখলুকের সরদার তাঁর কোলে এসে গেলো। তাঁবুতে এসে দুধ পান করাতে বসলেন হালীমা রা.। একের পর এক আসমানী বরকত প্রকাশিত হতে লাগলো। হযরত হালীমা (রা.) বলেন- আমার এ পরিমাণ দুধ নামলো যে, নবীজী (সা.) এবং তাঁর দুধভাই উভয়েই খুব তৃপ্তিসহ পান করলেন এবং নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়লেন। অপর দিকে উষ্টীর প্রতি লক্ষ্য করে দেখলেন, দুধে তার স্তন টানটান হয়ে গেছে। আমার স্বামী তা দোহন করলেন।
আমরা সকলেই তৃপ্তি সহকারে পান করে বেশ আরামে রাতটুকু কাটালাম। বহুদিন পর এ রাতেই প্রথম আমরা শান্তির সাথে ঘুমিয়ে ছিলাম । এখন তো আমার স্বামীও বলতে লাগলো যে, হালীমা তুমি তো বড় মুবারক সন্তান এনেছো! আমি বললাম- আমারও এই মনে হচ্ছে যে, সে অত্যন্ত বরকতময় ছেলে ।
অতঃপর আমরা মক্কা থেকে বাড়ীর পথে রওনা হলাম। আমি তাঁকে কোলে নিয়ে ঐ গাধাটির উপরই আরোহন করলাম। এবার আল্লাহর কুদরতের বিস্ময়কর তামাশা প্রত্যক্ষ করলাম। সেই দুর্বল গাধাটি এমন দ্রুত গতিতে চলতে শুরু করলো যে, অন্য কারো সাওয়ারী এর কাছেও পৌঁছতে পারছিলো না। আমার সহযাত্রী মহিলাগণ আশ্চার্যান্বিত হয়ে বলতে লাগলো যে, (হালিমা!) এটি কি ঐ গাধাই, যার উপর চড়ে তুমি এসেছিলে?
মোটকথা, যাত্রাপথ অতিক্রান্ত হলো। আমরা বাড়ীতে পৌঁছলাম। সেখানে প্রচন্ড দূর্ভিক্ষ পড়েছিল। সকল দুগ্ধপ্রাণী দুগ্ধশূন্য ছিল। কিন্তু আমি গৃহে প্রবেশ করইে দেখি আমার সমস্ত বরকীর স্তন দুধে টইটুম্বর, এখন প্রতিদিন আমার বকরী সমূহ দুধে পরিপূর্ণ হয়ে ঘরে ফিরে। অথচ অন্য কারো বকরীর স্তনে এক ফোটা দুধও পাওয়া যায় না। আমার গোত্রের লোকজন তাদের রাখালদেরকে বললো- হালীমার বকরীগুলো যেখানে চরে, তোমরাও সেখানে তোমাদের পশু চরাও। কিন্তু সেখানে তো চারণভূমি ও মাঠের কোন বিশেষত্ব ছিল না; বরং অন্য কোন রত্নের পরশেই এসব হচ্ছিল। সে সব লোকজন তা কোথা থেকে আনবে। তাই তো একই স্থানে চরানোর পরও তাদের পশুগুলো দুধশুন্য থাকতো আর আমার বকরীগুলো দুধে পরিপূর্ণ হয়ে ফিরতো ।
এভাবে আমরা একের পর এক তাঁর বরকতরাশি প্রত্যক্ষ করতে থাকলাম। একে একে দু'বছর পূর্ণ হয়ে গেলো। আমি তাঁর দুধ খাওয়ানো বন্ধ করে দিলাম। -‘আস সালিহাত' থেকে সংগৃহীত ।