সিয়াম পালনের ক্ষেত্রে কী কী কাজ ও আমল অত্যাবশ্যক?
প্রশ্নোত্তরে ইসলামী জ্ঞান > সিয়াম > সিয়াম/রোযা
140
Answer:
সিয়াম অবস্থায় যা অবশ্য করণীয়
প্রশ্ন : সিয়াম পালনের ক্ষেত্রে কী কী কাজ ও আমল অত্যাবশ্যক?
উত্তর : সিয়াম অবস্থায় অত্যাবশ্যকীয় আমলসমূহ :
[১] পাঁচ ওয়াক্ত ফরয সালাত আদায় করা। কোন শরয়ী উযর না থাকলে সালাত মাসজিদে গিয়ে জামাআতের সাথে আদায় করা। জামাআতে সালাত আদায়কে বিজ্ঞ ওলামায়ে কিরাম ওয়াজিব বলেছেন। যারা জামাআতের সাথে সালাত আদায় করে না তারা ২৭ গুণ সাওয়াব থেকে বঞ্চিততো হয়ই, উপরন্তু ফজর ও ঈশার জামাআত পরিত্যাগকারীকে হাদীসে মুনাফিকের সাথে তুলনা করা হয়েছে। যারা অবহেলা করে বিনা ওযরে সালাত দেরী করে আদায় করে তার সালাত একশবার পড়লেও তা কবুল হবে না বলে উলামায়ে কিরাম মন্তব্য করেছেন। আর মসজিদে গিয়ে সালাত আদায় থেকে বিরত থাকতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্ধ ব্যক্তিকেও অনুমতি প্রদান করেন নি।
[২] মিথ্যা না বলা।
[৩] গীবত না করা- আর তা হলো অসাক্ষাতে কারো দোষত্রুটি বা সমালোচনা করা
[৪] চোগলখোরী না করা- আর তা হলো এক জনের বিরুদ্ধে আরেকজনকে কিছু বলে ক্ষেপিয়ে তোলা ও ঝগড়া লাগিয়ে দেয়া।
[৪] ক্রয় বিক্রয় ও অন্যান্য কাজে কাউকে ধোঁকা না দেয়া।
[৫] গান গাওয়া ও বাদ্যযন্ত্র বাজানো থেকে বিরত থাকা, মধুর কণ্ঠে গাওয়া যৌন উত্তেজনামূলক গান থেকে আরো বেশি সাবধান থাকা।
[৬] সকল প্রকার হারাম কাজ-কর্ম পরিহার করা।
জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন,
যখন তুমি রোযা রাখবে তখন যেন তোমার কর্ণ, চক্ষু এবং জিহবাও মিথ্যা ও হারাম কাজ থেকে রোযা রাখে। তুমি প্রতিবেশিকে কষ্ট দেয়া থেকে বিরত থাকো। আত্মমর্যাদা ও প্রশান্তভাব যেন তোমার উপর বজায় থাকে এমন হলে তোমার রোযা রাখা ও না রাখা সমান হবে না । (ইবন আবী শাইবা : ৮৮৮০)
[৭] ইসলামকে জীবনের সকলক্ষেত্রে অনুসরণ করা।
মসজিদে যেমনভাবে ইসলাম তেমনি পরিবার, সমাজ, ব্যবসা এবং রাষ্ট্রীয় জীবনেও ইসলামকে একমাত্র জীবন বিধান হিসেবে বাস্তবায়ন করা।
আল্লাহ বলেন,
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা ইসলামে দাখিল হও পরিপূর্ণভাবে (অর্থাৎ জীবনের সর্বক্ষেত্রে)। (বাকারাহ ২০৮)
[৮] সিয়াম আবস্থায় পাপাচার ত্যাগ করা এবং অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকা।
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
(ক) কত সিয়াম পালনকারী আছে যাদের রোযা হবে শুধু উপোস থাকা। আর কতলোক রাতের ইবাদতকারী আছে যাদের রাত জাগরণ ছাড়া ইবাদতের কিছুই হবে না। (অর্থাৎ পাপকাজ থেকে বিরত না হওয়ার কারণে তার রোযা যেন রোযা নয়, তার রাতের সালাতও যেন ইবাদত নয়)। (আহমাদ : ৯৬৮৩; দারেমী : ২৭৬২)
(খ) তোমাদের মধ্যে কেউ যদি রোযা রাখে, সে যেন তখন অশ্লীল কাজ ও শোরগোল থেকে বিরত থাকে। রোযা রাখা অবস্থায় কেউ যদি তাকে গালাগালি ও তার সাথে মারামারি করতে আসে, সে যেন বলে “আমি রোযাদার”। (মুসলিম : ১১৫১ )
(গ) শুধুমাত্র পানাহার ত্যাগের নাম রোযা নয়, প্রকৃত রোযা হল ( সিয়াম অবস্থায়) বেহুদা ও অশ্লীল কথা এবং কাজ থেকে বিরত থাকা। (ইবনু খুযাইমা : ১৯৯৬)
(ঘ) যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা ও কাজ এবং অজ্ঞতা থেকে মুক্ত হতে পারেনি সে ব্যক্তির শুধুমাত্র পানাহার বর্জনের (এ সিয়ামে) আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই। (বুখারী : ৬০৫৭ )
[৯] রোযা রাখা (ও অন্যান্য ইবাদত) একমাত্র আল্লাহকে খুশী করার জন্য করা। আল্লাহ বলেন,
“মানুষকে এ নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে, তাদের ইবাদত যেন শুধুমাত্র আল্লাহকে খুশী করার জন্য হয়।” (বাইয়্যেনাহ : ৫)
[১০] সকল হুকুম আহকাম পালনে নাবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম'র সুন্নাত তরীকা অনুসরণ করা।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
“যে ব্যক্তি এমন (তরীকায়) কোন আমল করল, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক নির্দেশিত সেই কাজ আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য তো হবেই না রবং) তা হবে প্রত্যাখ্যাত'। (মুসলিম : ১৭১৮)
[১১] সিয়াম ভঙ্গের সহায়ক কাজ-কর্ম পরিহার করা স্বামী-স্ত্রীর আলিঙ্গন, চুম্বন বা একত্রে শয়ন জায়েয হলেও তা যেন রোযা ভঙ্গের পর্যায়ে নিয়ে না যায় সে বিষয়ে সতর্ক থাকা।
[১২] অন্তরে ভয় ও আশা পোষণ করা।
কোন অজানা ভুলের জন্য রোযাটি ভেঙ্গে যায় কিনা এ ধরনের ভয় থাকা এবং আল্লাহর কাছে এর প্রতিদান পাবো এ আশাও পোষণ করা। অন্তরকে এ দু'য়ের মধ্যে সামঞ্জস্য করে রাখতে হবে।
This Particular section is dedicated to Question & Answer only. If you want learn more about প্রশ্নোত্তরে ইসলামী জ্ঞান. Then you can visit below links to get more depth on this subject.
Join Our telegram group to ask Questions
Click below button to join our groups.