ছটফটে বাপি

Tuhina Parveen (Rakhi)   2018-05-17   Student   WhatsappStory > Chotfote-Bapi   1537 Share

খুব ছটফটে বাপি, নামে মাত্র স্কুল যাই পড়াশুনার প্রতি কোনো আগ্রহ নেই। স্কুলে ওর মন বসে না, বাবার ভয়েই স্কুলে যাওয়া। তাও আবার জানলা দিয়ে উকিঝুকি মারে আর রাস্তা দিয়ে যাওয়া গাড়ি গুলোকে দেখে। ওর একটাই নেশা ও গাড়ি চালাবে। এখন সবে ক্লাস এইট, ও আর পড়তে চাই না, বাবাকে জানিয়েছে ওর ভালো লাগাটা, ও আর পড়বে না, গাড়ি চালাবে ড্রাইভারি করবে, শুনেই ওর বাবা রেগে আগুন, কি তুই ড্রাইভার হবি, শুনেছি সবাই ডাক্তার, ইন্ঞ্জিনিয়ার হতে চাই, শেষে তুই কিনা ড্রাইভার হবি, সেদিন কি মার না মেরেছে বাপির বাবা। তবে বাপি ঠিক করেছে ও কারো কথা শুনবে না। ও ড্রাইভার হবেই। এখন বাপি দিল্লী, ওখানে গাড়ি চালাই। ওর স্বপ্ন পূরন হয়েছে। মার বারবার বলাতে ওর বাবার রাগটা কমেছে। ফোন করে বাড়ি আসতে বলেছে। বাপি ওর বাবার কথা রেখেছে, ওর মা খুব খুশি, বাপির এখন সব মেনে নিয়েছে। বাপি মনের দিক থেকে খুব ভালো ছেলে, তবে মেয়েদের প্রতি একটু বেশিই দূর্বল, তাইতো ওর একটা প্রেম বেশিদিন টেকেনা, একটু আধটু নেশা করে এখন, মা বলে পুরুষ মানুষ একটু নেশা করবেই, তবে লোকে মাতাল বলেই জানে। মেয়ে পটাতে পারলেও বিয়েটা সম্বন্ধ করেই হচ্ছে। বিয়ের দিন সে কি সমস্যায় পরেছে, বাপি যে গাড়িতে চড়ে বিয়ে করতে যাচ্ছে, প্রচন্ড বৃষ্টির জন্য গাড়িটা কাদায় আটকে গেছে, গাড়ির ড্রাইভার গাড়িটা আর টানতে পারছে না, বাপি দেখেশুনে আর থাকতে পারেনি, বরের আসন ছেড়ে গাড়ির স্টেয়ারিংটা ধরেছে, সেদিন বাপি নিজেই গাড়ি চালিয়ে বিয়ে করতে গেছে। ওর বউ বেশ সুন্দর, বাপি খুশি, তবে খুব সাদামাটা এটাই ওর অপছন্দ, ভেবেছে মর্ডান হয়ে যাবে, ওর বউ পারেনি খুব সরল যে। দাম্পত্য জীবনে বাপি খুশি না, ওদিকে আবার এক সমস্যায় পরেছে, নিজে অতিরিক্ত স্মাট হওয়ায়, পুলিশে প্রায় ওর গাড়ি আটকায় ,সন্দেহ করে, লরি ড্রাইভার বলে চেনা যায় না যে। এবার লরি নিয়ে ওড়িশা যাওয়ার পথে ডাকাতের কবলে পরেছে, ওর সব কিছু চুরি গেছে, ওর ড্রাইভিং লাইসেন্সটাও ডাকাতরা নিয়ে গেছে। এখন বাপি বাড়িতেই আছে। বাপির বউ মা হতে চলেছে, ভালোবাসার ছোঁয়াই না, যৌনতার দায়েই আজ বাপির বউ এর মা হওয়া।কিছুদিন পর ওর বউ এক মেয়ের জন্ম দিয়েছে। বাপি আজ খুব খুশি, মেয়েকে নিয়ে কত সপ্ন ওর চোখে, ওর মেয়েকে খুব স্বাধীনতা দেবে, তাই তো নাম দিয়েছে প্রিয়াঙ্কা। অনেক দিন হয়ে গেছে বাপির আর বাড়িতে থাকতে ভালো লাগছে না, ড্রাইভার মানুষ গাড়ি না চালিয়ে থাকতে পারে না। বাড়ির সকলের খুব অমত, বাবা চান বাড়িতেই কিছু করে কম্মে খাক, কিন্তু বাপি তা চাই না, ওর সপ্নকে ও এইভাবে নষ্ট হতে দেবে না, তাই বাপি এবার ও কেউকে না বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেছে। তবে এবার বাপি আর বাড়ি ফিরেনি, এখন কেউ তার খোঁজ জানে না। সেই দিনের পর থেকেই বাপি নিরুদ্দেশ।

...........Tuhina Parveen(Rakhi)...........